২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৯ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
রাতের আঁধারে বিভিন্ন কবরস্থান থেকে মানুষের কঙ্কাল এবং হাড়গোড় চুরি করে একটি চক্র। চুরি করা এ সব কঙ্কাল বিক্রি করা হয় বিভাগীয় শহর রংপুর এবং রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে। কঙ্কাল চুরির সময় চোর চক্রের ৫ সদস্যকে আটকের পর তথ্য এমন পেয়েছে পুলিশ।
২৭ আগষ্ট গত রবিবার রাত সাড়ে ১১টায় দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার চৌধুরীহাট-বালাপুকুর কেন্দ্রীয় কবরস্থান থেকে মৃত মানুষের কঙ্কাল চুরির চেষ্টার সময় ৫ যুবককে আটক করে পুলিশ। কবরস্থানটি উপজেলার ১০নং মোহনপুর ইউনিয়নে অবস্থিত।
২৮ আগষ্ট সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খোদাদাদ হোসেন এ সব তথ্য জানান। এ ঘটনায় বীরগঞ্জ থানায় কবরস্থানে অনধিকার প্রবেশ ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা সহ কঙ্কাল চুরির অপরাধে একটি মামলা হয়েছে। আসামীদেরকে সোমবার বিকেলে দিনাজপুরের আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
চক্রটির গ্রেফতার হওয়া সদস্যরা হলেন, শেরপুর জেলার নকলা থানার আদর্শগ্রাম-টাংগাইলাপাড়া এলাকার মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে লালচান (৩০), বাবর হোসেনের ছেলে আব্দুস সোবাহান সফু (২৮), মৃত ওসমান গণির ছেলে সিরাজুল ইসলাম (২৭), মৃত ছাবেদ আলীর ছেলে ফরিদ শেখ (২৪) ও ময়মনসিংহ সদর থানার অষ্টাধর গ্রামের তাজিম উদ্দিনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন বাবু (২৫)।
চলতি মাসে দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার ঘোড়াঘাট কেন্দ্রীয় কবরস্থান এবং বীরগঞ্জ উপজেলার চৌধুরীহাট-বালাপুকুর এবং তুলশীপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থান থেকে মৃত মানুষের কঙ্কাল ও হাড়গোড় চুরির ঘটনা ঘটে। ঘোড়াঘাটের একই কবরস্থান থেকে গত মার্চ মাসেও ছয়টি কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটেছে। কঙ্কাল চুরির ঘটনায় ঘোড়াঘাট থানাতেও একটি মামলা হয়েছে। তবে কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বীরগঞ্জ থানা এলাকা থেকে আমরা ৫ জনকে গ্রেফতার করেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা আমাদেরকে জানিয়েছেন দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন উপজেলার কবরস্থান থেকে তারা মৃত মানুষের কঙ্কাল ও হাড়গোড় চুরি করতো। কঙ্কাল সংগ্রহের জন্য তারা মূলত পুরাতন কবর গুলোকে টার্গেট করতো। চক্রের সদস্যরা ২-৩ টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কঙ্কাল গুলো চুরি করে। তাদের একেকটি গ্রুপে ২-৩ জন সদস্য থাকে।’
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘আসামীদের ভাষ্যমতে চুরি করা এ সব কঙ্কাল তারা রংপুর এবং ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ৬ হাজার ৫০০ থেকে ৭ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করে। এই চক্রের সাথে আরো কারা জড়িত আছে এবং কঙ্কাল গুলো কারা কিনে কোথায় বিক্রি করছে, তা খুঁজে বের করতে আমরা কাজ করছি।’